ফেসবুকে কত টাকার অ্যাডভার্টাইজিং করলে ভাল?
প্রথমেই আপনাকে একটু হতাশ করতে চাই। কত টাকার বুস্ট দিলে কত টাকার সেল হবে এটা বিশ্বের কোন ডিজিটাল মার্কেটারই বলতে পারবে না। আরো অনেক প্রশ্ন আপনাদের মনে জাগতে পারে, কত টাকার বুস্ট করলে কত জন মানুষ দেখবে! আচ্ছা, আপনার কাছে আমার একটি প্রশ্ন, মনে করেন টিভিতে আপনি একটি বিজ্ঞাপণ দিয়েছেন। এখন আপনি কি বলতে পারবেন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কত জন আপনার বিজ্ঞাপণটি দেখেছে?পারবেন না তাইতো? জি, আসলেই এটি বলা সম্ভব নয়।
তাই কোন এজেন্সি বা ব্যক্তি আপনাকে এরকম তথ্য দিলে সেখান থেকে সাবধান হোন।কত টাকার বুস্ট দিলে সেল কত টাকার হবে, এটি বলা না গেলেও আপনাকে একটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে, সেটি হল প্রতিযোগিতার বাজারে আপনি যদি কম টাকার বুস্ট দেন তাহলে সেল না হবার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি।
তাই আমাদের একটি সাজেশন প্রতিদিন কমপক্ষে ৫ ডলার বুস্ট করুন, ৪ দিনের কমে নয়। মানে ৪ দিনে সর্বনিম্ন ২০ ডলার বুস্ট দিন। যেকোন অ্যাড ৪ দিনের নিচে দেয়া ভাল নয়, কেননা ফেসবুক এটি নিজেই স্বীকার করে। অ্যাডভার্টাইজিং টি লার্নিং করতে ফেসবুকের কিছু সময় লাগে, যার কারনে ভাল ফলাফল পেতে হলে অবশ্যই আপনাকে কমপক্ষে ৪ দিন অ্যাডটি রান করতে হবে।
ফেসবুকে কত টাকার অ্যাডভার্টাইজিং করলে ভাল এগুলো বলা পসিবল না হলেও এস্টিমেট দেয়া যেতেই পারে। তবে মনে রাখবেন ফেসবুক আপনাকে যে এস্টিমেট দেয়, সেটিও ১০০% সঠিক নয়। তাই এসব চিন্তা থেকে বের হয়ে এসে, চলুন আমরা অন্য ফ্যাক্টর নিয়ে কথা বলি যেগুলো আপনার সেল বাড়াতে সাহায্য করবে।
প্রোডাক্টের ছবি হতে হবে আকর্ষণীয়ঃ
আপনার প্রোডাক্ট এর ছবিই বলে দেবে আপনার সেল কেমন হবে। প্রোডাক্ট এর ছবি এমন ভাবে তুলতে হবে যেন প্রথম দেখাতেই কাস্টোমার আপনার প্রডাক্টের প্রেমে পড়ে যায়। অনেকে ড্রেস প্রডাক্টের ক্ষেত্রে ক্যাটালগের ছবি ব্যবহার করেন যেখানে ইন্ডিয়ান/পাকিস্তানী মডেলের ছবি থাকে। এটি অনেক পুরাতন পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে মার্কেটিং কোন কাজে আসবে না এখন।
ক্রিয়েটিভিটির শেষ নেই, নতুন কিছু ভাবুন। অনেকে পুতুল/ হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে প্রডাক্ট ফটোগ্রাফি করে। আপনি এর চাইতে নতুন কিছু খুজুন। সম্ভব হলে নিজস্ব মডেল ব্যবহার করুন অথবা একেবারেই না পারলে পুতুল/ হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে প্রডাক্ট ফটোগ্রাফি করুন।
প্রোডাক্টের ছবিতে টেক্সটঃ
ছবিতে লেখা রাখবেন তো আপনার সেল একেবারেই হবে না। কেন না ২০% এর বেশি লেখা থাকলেই আপনার বুস্টিং এর রিচ হবে না। তাই চেষ্টা করুন লেখা যেন ছবিতে না থাকে। মুল্য, কোড ইত্যাদি দিতে হলে ডেস্ক্রিপশনে উল্লেখ করুন।
এর পরও ছবিতে লেখা দিতে চাইলে লিংকের ছবিটি আপ্লোড করে যাচাই করে নিন আপনার ছবিটি ঠিক আছে কি না!
প্রোডাক্ট ভিডিওঃ
ছবির তুলনায় ডিভিওতে প্রডাক্ট দেখা মানুষ বেশি পছন্দ করে। তাই সম্ভব হলে প্রোডাক্টের ভিডিও ফটোগ্রাফি করুন। এখন ফেসবুকেই অনেক অপশন পাবেন যেখান থেকে স্লাইড ভিডিও বানাতে পারবেন। অরিজিনাল ভিডিও না পারলে অন্তত এই কাজটি করুন।
অ্যাডভারটাইজিং পোষ্টে কতগুলো প্রোডাক্টের ছবি দিবেনঃ
একটি পোষ্টে কত গুলো ছবি দিবেন এটা নিয়ে কেউ কখনো ভাবি না আমরা। ইচ্ছা মত ছবি বেশি দিয়ে দেই। এতে করে আপনার রিচ কমে যাবে যদি ছবির সাথে আপনার বাজেট না মিলে।
যদিও এটার নির্দিষ্ট কোন নথি নাই তবুও কিছুটা পরামর্শ দেয়া যেতে পারে।
আপনার ছবির সংখ্যা যদি ১০-১৫ টা হয় তবে ৩-৫ ডলার প্রতিদিন সর্বনিম্ন খরচ করতে পারেন।
আপনার ছবির সংখ্যা যদি ১৬-২৫ টা হয় তবে ৫-৭ ডলার প্রতিদিন সর্বনিম্ন খরচ করতে পারেন।
আপনার ছবির সংখ্যা যদি ২৬-৪০ টা হয় তবে ১০-১২ ডলার প্রতিদিন সর্বনিম্ন খরচ করতে পারেন।
হ্যাশ ট্যাগ ব্যবহারঃ
আপনার পোষ্টে হ্যাশ ট্যাগ (#) ব্যবহার করলে উপকৃত হবেন। হ্যাশ ট্যাগ (#) দিলে প্রথমেই বিষয়টা নজর কাড়ে কাস্টমারদের। যেমনঃ #Big_Sale, #Darun_Offer ইত্যাদি ।
কল টু অ্যাকশনঃ
কল টু অ্যাকশন রাখুন। এতে সেল বাড়বে। কল টু একশন মানে আপনার পোষ্টে এমন কোন শব্দ লিখেন যাতে কাস্টোমার অর্ডার করতে বাধ্য হয়। যেমনঃ Send Message, Call Now ইত্যাদি
পোষ্ট কনটেন্টঃ
আপনার পোষ্টে বেশি লেখা না দেয়ার চেষ্টা করুন। অল্প কথাতে সুন্দর করে সাজিয়ে লেখুন। বেশি লেখা দিলে কাস্টোমার বিরক্ত হয়। এতে কাস্টোমার হারানোর সম্ভাবনা থাকে।
প্রোডাক্ট মূল্যঃ
পোষ্টে প্রোডাক্টের মুল্য না লিখে তাদেরকে আপনার সাথে কথা বলতে বাধ্য করুন। ইনবক্সে অথবা কমেন্টে তাদেরকে কমেন্ট করার একটা ওয়ে বের করে দিন। এতে বুস্ট করলে আপনার পেইড রিচ এর সাথে অরগানিক রিচ ও বেড়ে যাবে।ফেসবুকে কত টাকার অ্যাডভার্টাইজিং করলে ভাল সিদ্ধান্ত আপনার।
কিছু গুরুত্তপূর্ণ জিনিস এই ব্লগটিতে প্রকাশ করা হল (ফেসবুকে কত টাকার অ্যাডভার্টাইজিং করলে ভাল) যেটি আপনাকে সেল জেনারেট করতে সাহায্য করবে। সব সময় একটি কথা মনে রাখবেন, উপরের বিষয় গুলো অবশ্যই আপনি মনে রাখবেন এবং প্রয়োগ করবেন। কিন্তু, নিজের একটি প্ল্যান তৈরি করুন। আপনার কাস্টোমার কারা হতে পারে, তাঁদের সম্পর্কে রিসার্চ করুন। একটি সুন্দর পরিকল্পনাই পারে আপনার বিজনেসকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। অন্যের কপি করে নয়, নিজের আইডিয়া কাজে লাগান। কপি জিনিস বেশি দিন টিকে না।
এই যেমন ধরুন, স্বপ্ন ক্যারিয়ার আইটির অনেক পোষ্ট অনেক নামমাত্র কোম্পনী কপি করে বিজ্ঞাপণ চালায়। কিন্তু খুব বেশিদিন না, যার মধ্যে কোয়ালিটি আছে সে আগে থাকবেই, বাকিরা সারাজীবন পেছনেই থাকবে। তাই হতাশ হওয়া যাবে না, নিজের আইডিয়াকে কাজে লাগান, একটি আইডিয়া না হলে অন্যটি কাজে লাগান, সাফল্য আসবেই।
ফেসবুকে কত টাকার অ্যাডভার্টাইজিং করলে ভাল হবে এটা নিয়ে একটা ধারনা পেয়েছেন আসা করি।
ফেসবুকে কোন সময়ে বুস্ট করা উচিত আর কোন সময়ে বুস্ট করা উচিত নয়, জানতে ক্লিক করুন